করোসল ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
করোসল ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন।এর সাথে আরও জানুন করোসল ফলের অপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি জানতে চান যে করোসল ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে তাহলে এই আর্টিকেলটি না টেনের সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
করোসল ফলের সম্পর্কে জানার জন্য আপনি এই সঠিক জায়গাতে এসেছেন আপনি বিস্তারিতভাবে এই ফল সম্পর্কে জানতে পারবেন। আসলে আমরা অনেক রকম ফল খেয়েছি কিন্তু এই ফলটা খুব কম পাওয়া যায় বলে অনেকেই খাওয়া হয়নি। তাই করোসল ফলের সম্পর্কে বিস্তারিত উপকারিতা অপকারিতা জানুন।
ভূমিকা
১৯৭৬ সালে প্রথম করোসল ফলের গুনাগুনের সন্ধান পাওয়া যায়। এক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানোর জন্যকরোসল ফল অনেক উপকারী। তাই এই গাছ ঔষধি হিসেবে বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নীলফামারীতে প্রথম এই গাছ চাষ করা শুরু হয়। বর্তমানে মোটামুটি কয়েক জায়গাতে প্রতিটা জেলাতে এই গাছ চাষ করা হয়ে থাকে। এবং এই গাছের ফল ভারত থেকে আমদানি করা হয়। তাছাড়া বাংলাদেশেও করোসল ফল পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলে করোসল ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন তাছাড়াও পুষ্টিগুণ এবং ফল ও পাতার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন।
করোসল ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
করোসল ফল হচ্ছে অনেক উপকারী ঔষধি গুনে গুণান্বিত একটি গাছ। গাছের পাতাকেও বলে করোসল পাতা। শুধু করোসল ফলের উপকারিতা রয়েছে তা নয় করোসল পাতা অনেক উপকারিতা রয়েছে তাই করসোল ফল এবং পাতার উপকারিতা অনেক বেশি। করোসল ফল হচ্ছে মিউরিকাটা গোত্রের।এই গাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে কারণ করোসল ফল এবং পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
করোসল ফল খুব গন্ধযুক্ত কাটা বিশিষ্ট ফল। এ ফলটি দেখতে অনেকটা কাঁঠালের মত। তবে ভেতরের দিকটা তরমুজের মতো কিন্তু সাদা।করোসল পাতা সবুজ রঙেরই হয়ে থাকে। আসুন করোসল ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নি।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে: এই ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের অগ্ন্যাশয় এর কোষ গুলোকে রক্ষা করে ইনসুলিন উৎপাদন জন্য সহায়তা করে ।করোসল ফল ফাইবারের প্রধান উৎস যা চিনি শোষণ করতে সহায়তা করে এবং ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। তাই এই ফল খেয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ হিসেবে: করোসল পাতায় রয়েছে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাস্ট্রোজেনিন যা শরীরের ক্যান্সার কোর্স বৃদ্ধি পেতে বাধা প্রদান করে। করসোলের পাতার পুষ্টি উপাদান গুলো কেমোথেরাপির চাইতেও ১০ গুন বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ এর চেয়েও কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
হজমের সহায়ক হিসেবে: করোসল পাতাতে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান থাকায় এবং ফাইবার থাকায় হজম প্রক্রিয়াতে সহায়তা করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে: রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে আমাদের দেহের বিভিন্ন রকম উপকার করতে করোসল ফল এবং পাতা খুব উপকারী হিসাবে কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধন কারি: পাতায় ইমিউনিটি সিস্টেম উন্নত করতে সহায়তা করে যার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
মানসিক চাপ কমায়: করোসল পাতা আমাদের স্মৃতির করতে সহায়তা করে যার ফলে আমাদের বুকধর পর অস্থিরতা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
চোখের সমস্যা সমাধানে: লুটেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ করোসল ফলে থাকায় আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এর ফলে চোখের ছানি পড়া রোধ হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
করোসল ফলের অপকারিতা
প্রতিটা জিনিসের উপকারিতা রয়েছে এবং তার অপকারী তা রয়েছে। মাত্রা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা অপকারিতার দিকে চলে যায়।করোসল ফলও সে রকম। আপনার শরীরে যেটুকু প্রয়োজন তার অতিরিক্ত যদি গ্রহণ করা হয় তবে সেটা অপকারিতার দিকে চলে যায়। যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু গ্রহণ করুন। আসুন আমরা দেখিনি করোসল ফলের অপকারিতা দিকগুলো।
কিডনির সমস্যার সৃষ্টি করতে: এটি কিডনির সমস্যার সৃষ্টি করে তখন যখন আপনার শরীরে যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি করোসল ফল খেয়ে নিলে এটি সমস্যা সৃষ্টি করে।
লো প্রেসার রোগীদের ক্ষেত্রে: যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা অতিরিক্ত মাত্রায় করোসল ফল খেয়ে নিলে রক্তচাপ অনেকটাই কমতে থাকে। তাই যাদের লো প্রেসার রয়েছে তারা কম পরিমাণে করোসল ফল খাবেন।।
এলার্জি সমস্যায়: যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে অনেক কিছুই খাবার খাওয়ার বাধা রয়েছে।করোসল ফলে কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো দ্বারা এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে। বা যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের এলার্জি আরো বেড়ে যেতে পারে।
নিয়মিত ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে: যারা নিয়মিত ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করে থাকে তারা যদি ওষুধের পাশাপাশি করোসল ফল খেয়ে থাকে তাহলে ডায়াবেটিস এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
নিউরোলজিক্যাল সমস্যায়: অনেকের দেখা যায় স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব পড়ার পরে নিউরোলজিক্যাল সমস্যা সৃষ্টি হয়।
করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
করোসল ফল গাছ মূলত একটি ওষুধে গাছ হিসেবে পরিচিত। ক্যান্সার, লিভার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই গাছ ওষুধ হিসেবে কাজ করে গাছের ফল এবং পাতা।এই গাছের ফল যেমন উপকারী পাতাও অনেক উপকারী। এ গাছের চাষ আমাদের দেশে আগে হতো না। এখন বর্তমানে আমাদের দেশে করোসল গাছের চাষ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
আরো পড়ুন:অ্যালোভেরা জেল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
কারণ ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে করোসল গাছ আমদানি করা হয়। বর্তমানে আমাদের দেশে বিভিন্ন জেলাতেই করোসল গাছ চাষ হয়ে থাকে। যেমন ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ও রাজশাহী ইত্যাদি জেলায় চাষ হয়ে থাকে।করোসল ফল ভারত থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। তাই আগে এই ফল না পাওয়া গেলেও এখন এই ফল,গাছ এবং পাতা পাওয়া যায়।করোসল গাছ চাষ করার একটি নির্দিষ্ট মাটি ও জলবায়ু প্রয়োজন রয়েছে। সে কারণেই করোসল ফলের দাম বেশি হয়ে থাকে।
করোসল ফল খাওয়ার নিয়ম
করোসল ফল দেখতে কাঁঠালের মত তীব্র গন্ধযুক্ত একটি ফল। এটি ভিতর সাদা রংয়ের হয়ে থাকে।পাকা করোসল ফল খেতে অনেকটা আপেলও করার মত মনে হতে পারে। এর ফল বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়।করোসল ফল খাওয়ার নিয়ম নিচে দেয়া হল-
- পাকা অবস্থায় ফল হিসেবে অন্যান্য পাকা ফলের মত করে খাওয়া যায়।খাওয়ার সময় অবশ্যই গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ফলের সবুজ খোসাটা ওপরের ছাড়িয়ে নিয়ে এর ভিতর বীজগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে সরাসরি খেতে পারবেন।
- সালাদ হিসাবেও খাওয়া যায়। সালাদ তৈরি করতে এই ফল দিলে খেতে ভালো লাগে।
- আইসক্রিম তৈরিতে এর ফল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- তবে এই ফলের বীজ খাওয়া যাবেনা। বীজফেলে দিতে হবে।
- জুস হিসাবে খাওয়া যায়। এই ফলের সবুজ খোসা ফেলে দিয়ে এবং বীজগুলো ফেলে দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে ব্লেন্ডারের ভিতর দিয়ে দিতে হবে এরপর পরিমাণ মতো পানি এবং ব্রাউন সুগার দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। তাহলে জুস তৈরি হয়ে গেল।করোসল ফলের জুস এভাবে তৈরি করে খাওয়া যায়।
করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান
করোসল পাতার খাওয়ার নিয়ম
যে কোন জিনিস খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে তবে তার নিয়ম অনুযায়ী। অতিরিক্ত না এবং তার নিয়ম অনুযায়ী খেলে সেটা থেকে উপকার পাওয়া যায়। পুষ্টিগণ ও ভালো পাওয়া যায়।করোসল পাতার ক্ষেত্রেও সেরকম নিয়ম আছে সেভাবে খেলে পুষ্টিগুণ ভালো পাওয়া যাবে। তাহলে আপনি করোসল পাতার সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ পাবেন তা আমরা জেনে নি।
করোসলপাতা প্রথমে ১০-১৫ একটি নিয়ে নিন। এরপর পাতাগুলোকে সুন্দর করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি দিয়ে সেই পাত্রে ভিতর পাতাগুলো দিয়ে ফুটাতে থাকুন যখন পানি ফুটে যাবে তখন গরম করার পর চুলা থেকে নামিয়ে নিতে হবে। এরপর ছাকনা দিয়ে ছেকে নিন। তাহলে হয়ে গেল এটা করোসল পাতার চা। আপনি এইভাবে গরম খেতে পারেন অথবা ঠান্ডা করে ও খেতে পারেন আপনার ইচ্ছামত যা করে খেতে পারেন। প্রতিদিন খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে করোসল পাতার চা করে খেলে ভালো পুষ্টি গুণ পাবেন।
করোসল পাতার উপকারিতা
করোসল পাতা বেসন ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। এই পাতার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।করোসল পাতার উপকারিতা নিচে দেয়া হল।
- ঘুম পরিপূর্ণ হয়ে থাকে
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সহায়তা করে।
- উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
- চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
- হজম শক্তিতে সহায়তা করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে।
লেখক এর শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি নিয়মিত করোসলফল খেতে পারেন বা করোসল পাতা খেতে পারেন তবে আপনি অনেক পুষ্টিগুণে গুণিত হবেন এবং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে।করোসল ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন এ আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।আপনি যদি সম্পূর্ণ পোস্টটি কোন অংশ বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম-উপকারিতা ও অপকারিতা
আশা করি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে এবং উপকৃত হয়েছে। আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করুন এই আর্টিকেলটি। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
.png)
.png)
সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;
comment url