হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন এই আর্টিকেলে তাছাড়াও বাচ্চাদের হিট স্ট্রোকের লক্ষণসম্পর্কেও জানতে পারবেন। অনেকে এ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় হিট স্ট্রোক এর আক্রান্ত হয়। বুঝতে পারে না প্রথমত যে এ অবস্থায় কি করবে।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন

তাই আমার এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ না টেনে মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে জানতে পারবেন হিট স্ট্রোক কি কেন হয় এবং এর প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে।

ভূমিকা

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন আর্টিকেলে শুধু হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করার কথাই লেখা হয়নি। হিট স্ট্রোক কেন হয় ,বাচ্চাদের হলে তার করণীয়তা বাচ্চাদের হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।আপনারা আর্টিকেলের শুধু হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন বিষয়ে শুধু জানবেন না আরো অনেক কিছু সম্পর্কে জানবেন।

হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ

মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ দশমিক চার ডিগ্রি ফারেনহাইট। যখন অতিরিক্ত গরম পড়ে তখন মানুষের শরীরের পানি শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। এই তাপমাত্রা অতিক্রম করে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তার চেয়ে বেশি হলে তখন হিট স্টোক হয়। এ অবস্থায় এক পর্যায়ে চেতনা হারানোর পরিস্থিতি পরে। হিট স্ট্রোক হলে এর প্রতিকার গুলো অবশ্যই জেনে রাখতে হবে যেন যে কোন সমস্যা হলে কেউ হিট স্ট্রোক করলে দ্রুত প্রতিকার এবং প্রতিরোধ করা যায়।
প্রতিকারের উপায়
কেউ হিট স্ট্রোক করলে সেক্ষেত্রে চারটি কাজ আপনারা অবশ্যই করতে পারেন।
  • রোগীকে দ্রুত ঠান্ডা কোন স্থানে নিয়ে যেয়ে শুয়ে দিতে হবে। স্যালাইন ইলেকট্রোলাইট ড্রিঙ্ক বা ঠান্ডা পানি পান করাতে হবে।
  • মজা সহ শরীরের থাকা আদরকারী যত পোশাক আছে খুলে ফেলুন।
  • শরীর ঠান্ডা পানি দিয়ে কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। ঘাড় মাথা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে।
  • গ্রামে হলে পুকুরে নেমে বা বাতাসের জায়গায় দাঁড়িয়ে শরীরকে ঠান্ডা করতে দিতে হবে। এবং শহরে হলে ঠাণ্ডা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে শরীর ঠান্ডা করতে দিতে হবে।
  • উপরোক্ত কাজগুলো করার পরে অবশ্যই তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে দরকার। কারণ এক্ষেত্রে হিট স্ট্রোক করার পরে অনেকের শারীরিক অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার।
প্রতিরোধের উপায়
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই আমাদের জানা দরকার এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ।
  • দিনে তুলনামূলক কম বাইরে বের হতে হবে কারণ দিনে প্রচুর পরিমাণ রোদের তাপ থাকে।
  • যদি দুপুরে বা রোদের তাপ বেশি থাকে সে সময় বের হওয়ার প্রয়োজন পরে তবে অবশ্যই ছাতা, টুপি, ক্যাপ ইত্যাদি করে যেতে হবে।
  • দিনের বেলায় শারীরিক পরিশ্রমের কাজ থাকলে একটানা করা থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে পানির বোতল সঙ্গে রাখবেন যেন একটু পর পর পানি পান করা যায়।
  • বাসি খোলা খাবার থেকে বিরত থাকুন সহজে হজম হয় সেরকম খাবার খেতে হবে।
  • প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন যাতে পানি শূন্যতা দূর হয়।
  • দিনে বেশিরভাগ সময় ছায়ার মধ্যে থাকার চেষ্টা করতে হবে। এবং বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
  • ঢিলাঢালা এবং হালকা রঙের কাপড় পড়তে হবে।
  • তার থেকে বাঁচার জন্য ঘরের দরজা জানালো পর্দা নামিয়ে রাখতে হবে যেন বাইরে তাপ ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
  • অ্যালকোহল ও ক্যাফিন জাতীয় নেশা যুক্ত পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • অতিরিক্ত ঘেমে গেলে স্যালাইন পানি পান করা প্রয়োজন।
  • ইলেক্ট্রোলাইট এ সময় পান করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।
  • কেনাকাটার জন্য প্রয়োজন হলে সন্ধ্যার পরে বের হতে হবে।
  • ভাজাপোড়া অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার চা কফি গরম খাবার এগুলো বর্জন করতে হবে ।
  • হিট স্ট্রোক কখন হয়
  • হিট স্ট্রোক হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চাইতে উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘায়িত গরম বা শারীরিক পরিশ্রমের ফলে বেড়ে যায়। যার ফলে মস্তিষ্ক, হাট, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গ গুলোর ক্ষতি হতে পারে।
  • শারীরিক তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অতিরিক্ত বিপাকের ফলে উৎপন্ন তাপ বাহ্যিক পরিবেশের তাপ হারাতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে হিট স্ট্রোক হয়।
হিট স্ট্রোক এর প্রকারভেদ রয়েছে।হিট স্ট্রোক দুই প্রকারের হয়ে থাকে।
পারিশ্রমিক হিট স্ট্রোক এবং
অ- শ্রমিক হিট স্ট্রোক
পারিশ্রমিক হিট স্ট্রোক
অতিরিক্ত কাজ করার ফলে বা অতিরিক্ত গরম আবহাওয়াতে ব্যায়াম করার ফলে পারিশ্রমিক হিট স্ট্রোক ঘটতে পারে । অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার ফলে মানুষ যখন শরীরে পারিশ্রমিকটা বেশি করে তখন শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা যখন শরীরের সাথে একইভাবে সহনীয়শীল না হয় তখন সে ব্যক্তিরপারিশ্রমিক হিট স্ট্রোক সম্ভাবনা থাকে।
অ- শ্রমিক হিট স্ট্রোক
শারীরিক কোন পরিশ্রম ছাড়াও গরম, আর্দ্র আবহাওয়ার ফলে অ- শ্রমিক হিট স্ট্রোক হয়।। এটি সাধারণত বয়স্ক মানুষদেরই হয়ে থাকে।

হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ

অতিরিক্ত গরমের ফলে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনার ঝুঁকি বেশি থাকে।হিট স্ট্রোক হওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো জানা থাকলে আমারা অতি সহজেই বুঝতে পারবো যে হ্যাঁ কেউ হিট স্ট্রোক আক্রান্ত হচ্ছে। তাহলে আসুন আমরা লক্ষণগুলো জেনে নেই
তীব্র মাথাব্যথা
প্রচন্ড গরমে মাথা ব্যাথা শুরু হতে পারে। গরমে মাথাব্যথা করলে সেটি একটি হিট স্ট্রোক লক্ষণ হতে পারে।
দ্রুত হৃদস্পন্দন
যখন কারো হিট স্ট্রোক হয় তখন তার আগে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে অতি দ্রুত চলতে থাকে।
হাইপারভেন্টিলেশন
শ্বাস-প্রশাস ভারী হওয়া দ্রুত হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।
বমি বমি ভাব
হিট স্ট্রোক এর আগে বমি বমি ভাব হতে পারে। মাথা ব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা হয়।
কথা জড়িয়ে যাওয়া
কথা জড়িয়ে যেতে পারে এটি একটি হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।
বেশিতে ব্যথা
হিট স্ট্রোকের আগে অনেকেরই বেশিতে ব্যথা হতে পারে। অনেকেই মনে করে এটা সাধারণ ব্যাথা।
দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। যার ফলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যায় ও ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
ঘাম না হওয়া
একটি লক্ষণ হচ্ছে ঘাম না হওয়া। এর কারণ হচ্ছে প্রচন্ড গরমের ফলেও শরীর থেকে ঘামের বের না হওয়া কারণ শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ আর পানি নাই।
অতিরিক্ত কথা বলা, বিরক্ত হওয়া
অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফলে মানুষের বিরক্ত বোধ হতে পারে, রাগান্বিত হতে পারে এবং অযৌক্তিক কথা বলতে পারেও। একটি হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ।
পানি শূন্যতা, ঘাম ও প্রচন্ড পিপাসা
যে ব্যক্তিরহিট স্ট্রোকের কারণ দেখা যাবে তার প্রচন্ড পানি পিপাসা অনুভব হতে পারে।

বাচ্চাদের হিট স্ট্রোকের লক্ষণ

গ্রীষ্মের চরম তাপ্রবাহে শুধু বয়স্করা যে হিট স্ট্রোকের শিকার হয় তা নয় এখানে বাচ্চারাও হিট স্ট্রোকের শিকার হয়ে থাকে। শিশুরাও তীব্র গরমে ক্ষতিকর দিক দিয়ে নিরাপদ থাকতে পারে না। আসুন বাচ্চাদেরহিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো জেনে নি।
  • পানি শূন্যতা প্রচন্ড গরমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে বাচ্চাদের পানি শূন্যতা হতে পারে।
  • জ্বর অতিরিক্ত গরমে বাচ্চাদের জ্বর হতে পারে।জ্বর ১০৩ ফারেনহাইটের উপরে উঠে যেতে পারে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যেতে পারে। কখনো কখনো আবোল তাবোল বকতে পারে এবং খিঁচুনিও হতে পারে।
  • ঠান্ডা কাশি গরমের কারণে ঘাম বসে কাশি ও টনসিল হতে পারে।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

  • বাচ্চাদের গরমের সময় যতটা সম্ভব ঘরে খেলতে দিতে হবে। রৌদ্রের মধ্যে যেতে দেয়া যাবে না।
  • তাদের ফ্যানের নিচে রাখুন এবং প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে দিতে হবে। ফলের জুস, ডাবের পানি অথবা লেবুর শরবত দিলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
  • প্রতিদিন বাচ্চাকে গোসল করাতে হবে। ঘাম যেন না বসে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  • সুতি ঢিলাঢলা কাপড় বাচ্চাকে পরাতে হবে।
  • বাচ্চার শরীরে পানি যেন কম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘামের কারণে পানি অতিরিক্ত বের হয়ে যায় যার কারণে প্রস্রাব কম হতে পারে সেই জন্য খেয়াল রাখতে হবে বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে।

হিট স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা

হিট স্ট্রোক একটি প্রাণঘাতী অবস্থা। রোগের শরীরে অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে এ অবস্থায় পরিণত হয়। আমাদের দেশে গরমের মাত্রা অতিরিক্ত হলে এ অবস্থা হয়ে থাকে। তখন হিট স্ট্রোক আক্রান্ত বেড়ে যায়।তাই অবশ্যই হিট স্ট্রোক এর বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।হিট স্ট্রোক কি কেন হয় এর প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো জেনে রাখা ভালো।

যখন কেউ হিট স্ট্রোক আক্রান্ত হয় বুঝতে পারলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থানে নিতে হবে। ভারী কাপড় চোপড় পড়ে থাকলে সেগুলো খুলে স্বাভাবিক পাতলা কাপড় পরে দিতে হবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে ঘন ঘন শরীর মুছে দিতে হবে এবং পানি পান করাতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

লেখক এর শেষ কথা - হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন

হিট স্ট্রোক কি? হিট স্ট্রোক এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ , কখন হয়,হিট স্ট্রোক এর লক্ষণ,হিট স্ট্রোক এর প্রাথমিক চিকিৎসা এইসব বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আমার ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি না টেনে মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই জানতে পারবেন হিট স্ট্রোক সম্পর্কে ।হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানুন এই আর্টিকেলে আরো গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য নিশ্চয়ই পাবেন।

আশাকরি আমারে আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমার এই আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মস স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। নিয়মিত আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আমার আর একটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাদ বি ডি নীতিমালা; মেনেকমেন্টকরুনপ্রতিটিকমেন্টরিভিউকরাহয়;

comment url